মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টারঃ দিনমজুর পরিবারের যুবক আলিফ মিয়া (২০)। বেশ কয়েক বছর আগে তার বাবা মফিজল হক মারা যান। এরপর অভাবের সংসারে হাল ধরতে হয় তার। শুরু করেন ব্যবসায়ীদের মাছ কেটে দেওয়ার কাজ। এভাবে চার বছর ধরে মাছ কাটার উপার্জন দিয়ে সংসার চালছে এই যুবকের। সম্প্রতি পলাশবাড়ী কালিবাড়ী বাজারের মাছ কাটতে দেখা যায় আলিফ মিয়াকে। ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে আপন খেয়ালে বটিতে মাছ কাটছেন তিনি। আলিফ মিয়ার বাড়ি জেলার সাদুল্লুপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের তরফ সাদুল্লাহপুর গ্রামে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আলিফ মিয়া যে বয়সে পড়াশুনা আর খেলাধুলায় হইহল্লোড়ে মেতে থাকার কথা, ঠিক সেই সময়ে মারা যান তার বাবা মফিজল হক। এরপর বাবার অভাবের সংসারের হাল ধরতে দিনমজুর হিসেবে কাজ শুরু করেন অন্যের বাড়িতে। এতে হাড়ভাঙা পরিশ্রমের কারণে শারীরিক অক্ষম হয়ে পড়েন। এরই মধ্যে প্রায় চার বছর আগে কালিবাড়ী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী হাসানুর রহমানের দোকানে শ্রমিক হিসেবে মাছ কেটে দেওয়ার কাজ নেন। সেই থেকে এই কাজ অব্যাহত রেখেছেন। এ দিয়ে পরিবারের চার সদস্যের সংসার চালাচ্ছেন আলিফ মিয়া। এ থেকে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরছে তার।
কালিবাড়ী বাজারে আসা শহিদুল ইসলাম নামের এক মাছ ক্রেতা বলেন, এ বাজারের বড় আকারের মাছ বিক্রি হয়। এতো বড় মাছ এককভাবে কেনা সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে আলিফ মিয়ার কাছ থেকে কাটা মাছ পিস হিসেবে কিনে থাকি। এ ছেলেটা অনেকদিন ধরে এই কাজটি করছেন।
এই যুবক আলিফ মিয়া বলেন, বাবার রেখে যাওয়া অভাবের সংসার চালানোর চেষ্টা করছি। পেশা হিসেবে অন্যের মাছ দোকানে বটি দিয়ে মাছ কেটে পিস করে দিই। এ থেকে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পাই। এ দিয়ে চলছে সংসার। মাছ খুচরা মাছ ব্যবসায়ী হাসানুর রহমান বলেন, আগে হাতেগোনা দু-একজন মাছ কিনে কেটে নিতো। এখন ছোট হোক বড় হোক সব মাছ কেটে দিতে হয়। তাই আলিফ মিয়া দোকানে বসে বটিতে মাছ কেটে পিস করে দেন ত্রেতাদের। দিনশেষে তাকে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হয়।
কালিবাড়ী বাজারের ইজারাদার প্রতিনিধি রুবেল মিয়া জানান, সবচেয়ে বড় ও পরিচিত মাছের বাজার পলাশবাড়ীর এই বাজার। প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বড় আকারের মাছ বেচাকেনা হয়। বর্তমান স্মার্টযুগে অধিকাংশ ক্রেতা মাছ কেটে পিস করে বাড়িতে নিয়ে যায়। তাদের এই কাজের জন্য আলিফ মিয়া অত্যন্ত পারদর্শী। এতে খুশি ক্রেতারা।